‘নকশা’র কথা বললো সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদকে সরকার বিভিন্ন কারণে সংসদ ভবন এলাকার ‘জাতীয় কবরস্থানে’ সমাহিত করার অনুমতি দেয়নি।
এর মধ্যে প্রধান কারণ হল লুই আই কানের নকশা অনুযায়ী ওই এলাকায় কোনো করবস্থান রাখার সুযোগ নেই।
বিগত বিএনপি-জাতীয় পার্টি সরকার স্বাধীনতা বিরোধীসহ বেশ কয়েকজনকে সেখানে সমাহিত করে জাতীয় কবরস্থান নাম দেয়। এদিকে বর্তমান সরকার চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরসহ সব কবর স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এজন্য সেখানে ঠাঁই হয়নি কাজী জাফরের।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে কাজী জাফর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে গুলশানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল ৭টার দিকে মারা যান তিনি। পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে কবরস্থানে দাফনের জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। পরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়া গ্রামে বাবা-মায়ের কবরের পাশেই সমাহিত করা হয় তাকে।
জানা গেছে, নকশা উপেক্ষা করেই সংসদ ভবন এলাকায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ আটজনকে সমাহিত করা হয়েছে। নকশাবহির্ভূত এসব কবর এখন দ্রুত সরিয়ে ফেলার পক্ষে জাতীয় সংসদ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত কবরগুলো সরিয়ে নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার অ্যাড. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, কবরগুলো অবৈধভাবে বানানো হয়েছে। অনেক আগেই এগুলো সরিয়ে ফেলা উচিত ছিল। কিন্তু অতীতে কেউ সেই উদ্যোগ নেননি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেই উদ্যোগ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে গণপূর্ত বিভাগ এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। তাই নতুন করে বিতর্ক এড়াতে কাজী জাফরকে সেখানে সমাহিত করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
সূত্র জানায়, গত ৭ জুলাই একনেকের বৈঠকে ওই এলাকা থেকে কবরগুলো সরিয়ে ফেলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করে ১৪জুলাই গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রস্তাব অনুমোদনের পর কবরগুলো সরানোর কাজ শুরু হবে।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের শাসনামলে জাতীয় সংসদের মূল ভবনের উত্তর পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে কমপ্লেক্স করা হয়। সেখানে জিয়াউর রহমানের কবর স্থানান্তর করা হয়।
আর দক্ষিণ পাশে আসাদগেট ও মানিক মিয়া এভিনিউয়ের কোনায় সাতটি কবর রয়েছে। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের আমলে এসব কবর বানানো হয়। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজ ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী খান এ সবুরের কবরও রয়েছে। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খান, সাহিত্যিক-সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ, রাজনীতিক মশিউর রহমান যাদু মিয়া ও তমীজ উদ্দিন খানের কবর আছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ